ভালোবাসায় বাজিমাত করার অব্যার্থ কৌশল
ব্লগার ভায়েরা, ভালোবাসার গাছে একটু পানি দিতে শিখবো আজ। আপুদেরকে ভালোবাসা একটা Dynamic ব্যাপার Static নয় কোনদিনও। আপুরা যেহেতু ভাইয়াদের চেয়ে মানসিক ভাবে একটু বেশীই প্রভাবিত (ভাইয়ারা স্বভাবত: শারীরিক ভাবে) তাই তাদের সুখী করবার জন্য আপনার মন ও মনন আপনার টিশার্টের নীচের মেদহীন সিক্স প্যাকের চেয়ে বেশী জরুরী।
আপনি হেভী চামে লিভাইস জীনস পরতে পারেন। সানগ্লাস চোখে হিরো সাজতে পারেন মাগার লাজুক লাজুক রোমান্সের ছোঁয়া না থাকলে সব অস্টরম্ভা। তবে এর ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। তবে সেটা না হয় আরেকদিনের জন্য তোলা রইল। আজ আর আদি রস নয় বরং ইমোশন নিয়েই লিখবো। ভালোবাসার এক্সপ্রেশন (সেক্সপ্রেশন না কিন্তু) সবসময়ই প্রয়োজন।
আপুদের সত্যি সত্যি খুশী করার জন্য একটু নন –ট্রেডিশনাল চিন্তা ভাবনার প্রয়োজন আছে। সেই আদ্যিকালের “তোমার জন্য লাল গোলাপের শুভেচ্ছো” টাইপ চোথা মারতে গেলেই আজকালকার আপুরা পালাবে। তাই জোয়ারের মতো ভালোবাসা আনয়ন কল্পে কিছু টিপস দিচ্ছি সেগুলো চেস্টা করে দেখতে পারেন। তবে সতর্ক করছি যে আপনার উনি যদি এই ব্লগের পাঠিকা হন তবে এ পোষ্ট কপি পেস্ট করার জন্য ধরা খেতে পারেন এবং তার জন্যে আমি বিন্দু মাত্র দায়ি নই। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক, ভালোবাসায় বাজিমাত করার সি সব অব্যার্থ কৌশল।
১। চিঠি দিও
আমার চিঠি লিখা খুবই প্রিয়। হাতে চিঠি লিখা তো উঠেই গ্যাছে। কিন্তু আমি লিখি এখোনো। কিন্তু সাধারন কাগজে না। যেমন হলুদ রং এর “পোস্টইট” নোট পাওয়া যায় দোকানে। ১০০ করে ছোটো ছোটো পাতা থাকে একটা প্যাডে। ১০ দিন ধরে প্রতি পাতায় ছোটো ছোটো চিঠি লিখলাম, দিলাম। সুখে পানি এসে গ্যালো চোখে। (মোট খরচ ১০০ টাকা।)
২। কবিতায় প্রেম
আপনার উনি যদি কবিতা লেখেন তাহলে তার লেখা ছোট একখানি কবিতা পছন্দ করুন। আজকাল বনানীতে অনেক মেটালিক দোকানে কাঠের ওপর লেজার দিয়ে লেখার ব্যবস্হা আছে। কবিতাখানি লেজার দিয়ে কাঠের ওপর খোদাই করে কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিন। দেখুন কি হয়। (মোট খরচ ৮০০টাকা।)
৩। সারপ্রাইস
সাধারন জন্মদিন পালন না করে তার জন্মের ৭০০০ বা ৮০০০ তম দিনপালন করুন। কেক এর ওপর “শুভ ৮০০০ তম দিন” (বা অন্য কিছু) লিখে তাকে তাক লাগিয়ে দিন। কত দিন তা এক্সেল এ হিসাব করে বের করুন। (মোট খরচ ৮০০-১০০০ টাকা।)
৪। নূপুর থেরাপী
যদি সম্ভব হয় লং ড্রাইভে যান। নির্জন জায়গায় গাড়ী পার্ক করে গাড়ী থেকে নেমে তার দরজার পাশে যান। দরজা খুলে হাঁটু গেড়ে বসে তার পা খানি বের করেতে বলেন। অবাক হয়ে সে পা বের করে দিলে পকেট থাকে আগে থেকেই কেনা নূপুর পায়ে যত্ন করে পরিয়ে দিন। আলতো করে পা’দুটোয় চুমু খান। (মোট খরচ ৯০০ টাকা।)
৫। চিঠিতেই বাজিমাত
একটা চিঠি লিখুন কম্পিউটারে। ব্যানার, সাইনবোর্ডের দোকানে যেয়ে এম এস ওয়ার্ড ফাইল টা দিন। লম্বা ১০ ফুট পিভিসি ব্যানারে ওটা প্রিন্ট করিয়ে নিন। দু মাথায় দুটা কাঠের বর্ডার লাগান। তাকে পৃথিবীর সবচে” বড়প্রেমের চিঠি বলে গিফট করুন। (মোট খরচ ৫০০ টাকা।)
৬। না জন্মদিন
জন্মদিন হবার দরকার নেই। বছরের যেকোনো দিন সুন্দর একটা কেকের ওপরে “Happy Unbirthday” কথাটা লিখান । তাকে গিফট করুন। (মোট খরচ ৯০০ টাকা।)
লাইফ হ্যাকিং আরো বেশ কিছু টিপস্ –
- প্রত্যাবর্তন
- তারুন্যের প্রেম
- বেঁচে থাকার মন্ত্র
- নখের সৌন্দর্য চর্চায় নারী
- পুরুষ যা খোঁজে নারীর মাঝে
- সিলিকা জেল এর উপকারিতা
- ক্যারিয়ারের জন্য ‘ক্ষতিকর বস’কে চেনার উপায়
- রাগ করলেন তো জীতে গেলেন: আসলেই কি তাই
- রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন: রাগ নিয়ন্ত্রনের অব্যার্থ কৌশল
৭। শাড়ির কেরামতি
তার মা’য়ের জন্মদিনে সুন্দর মার্জিত একটা শাড়ী গিফট করুন। এরচেয়ে বড় খুশী আপুকে করতে পারবেন কিনা জানিনা। (মোট খরচ আপনার ওপর।)
৮। ফার্ষ্টেই ফার্ষ্ট এইড
একটা ছোট্ট বক্স কিনুন। তার মধ্যে এক পাতা প্যারাসিটামল, একবোতল ডেটল, কয়েক পাতা এডহেসিভ প্লাস্টার, ব্যান্ডেজ ইত্যাদি দিয়ে তার জন্য একটা ফার্স্ট এইড বক্স বানিয়ে, ওপরে নাম লিখে গিফট করুন। এটা কাজে লাগবে আর আপুমনি খুশী অবশ্যই হবেন। (মোট খরচ ৫০০টাকা।)
৯। ব্লগে মনের কথা
তার জন্য একটা ব্লগ খুলুন। জন্মদিনে কেক কাটার পাশাপাশি সবার সামনে (বা দু’জনে একাকি) তাকে দিয়ে অফিসিয়ালি তা উদ্বোধন করান। ব্লগে কি লিখবেন? যেমন Top 10 Things That I Like About You বা মজা করে Top 10 Thing I hate About You এসব। (মোট খরচ ০ টাকা।)
১০। রান্না-বান্নায় প্রেম
সম্ভব হলে অন্তত: একবার তাকে নিজ হাতে রান্না করে খাওয়ান। (মোট খরচ ৫০০ টাকা।)
১১। ভালবাসার গোলাপ
আজকাল দূরপাল্লার বাস গুলোতে সুপারভাইজার থাকে যারা যাত্রার শেষে সব্বাইকে একটা করে রজনিগন্ধার কাঠি ধরিয়ে দেয়। তাকে ১০০ টাকা ধরিয়ে দিন আগেই। গন্তব্যে পৌছে সব্বাইকে রজনিগন্ধা ধরালেও আপনার উনার জন্য ১০ টা গোলাপ তুলে দেবে কোনো ঝামেলা ছাড়াই। (মোট খরচ ১০০ টাকা।)
১২। নতুন নোট
ব্যাংক থেকে ৫০০ টাকা ভাংগিয়ে চকচকে ১০ টাকার নোট নিন। তার ব্যাগে গোপনে রেখে দিন। রিকশা ভাড়া দেবার কস্ট থেকে তাকে দিন মুক্তি। ঈদের সালামী হিসেবে আমি তাকে আগে থেকেই ব্যংক থেকে আনা নতুন চক চকে ১০ এবং ২০ টাকার নোট আনিয়ে রেখেছিলাম। সালামী হিসেবে সেই নোট হাতে পাবার পর অনেক খুশি হয়েছিল সে। (মোট খরচ ৫০০ টাকা।)
১৩। ট্রান্সফার
তার কাছে সবসময় যেনো অন্তত: ১০০ টাকার ফোন কার্ড থাকে তা দেখুন। আপনার ফোনে ব্যালেন্স ট্রান্সফার সুবিধা নিন। প্রয়োজনে তার কাজে লাগতে পারে। কিংবা নগদ অথবা বিকাশ এর মাধ্যমে তার মোবাইল রিচার্জ করে দিন। দেখবেন অনেক খুশি হবে সে। (মোট খরচ ২০০ টাকা/মাসে।)
১৪। সরি
ভাইরে, ঝগড়া ছাড়া কোনো সম্পর্ক নাইরে। ঝগড়ার সময় পুরুষ হিসেবে চুপ থাকাই শ্রেয়। উনার চিল্লাচিল্লি শেষ হলে মুচকি হেসে সরি বলুন। (মোট খরচ ০ টাকা।)
শুধু কাছে এসে পাশে থাকার নাম ভালবাসা নয়। কখনো কখনো দূরে থেকেও ছায়ার মত পাশে থাকার নাম ভালবাসা। লেখার বানানে ভুল হলে চুপিসারে ভুল ধরিয়ে দেয়াটাও ভালোবাসা। অনেক অনেক দিন, সপ্তাহ, মাস পেরিয়ে বছর ঘুরে অভিমানী আঙ্গুলে “জন্মদিনের শুভেচ্ছা” জানানোটাও ভালোবাসা। ভালোবাসা গোপন করা ও গোপন রাখাটাও এক প্রকারের ভালোবাসা।
আর তাই আমার কাছে ভালোবাসা না থাকা বলে কিছু নেই। ভালোবাসা ছিল, ভালোবাসা আছে, ভালোবাসা থাকবে বারো মাস। সবচে’ বড় জিনিষ। মন দিয়ে ভালোবাসুন। তার সংগ উপভোগ করুন। এমন কিছু পাগলামি করুন যাতে সারা জীবন আপু আপনাকে মনে রাখে।
১৫/০৫/২০২২, ১০.৫০ AM