মাথার কাছে ল্যাপটপ–ফোন আর নয়
সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মোবাইল এখন মানুষের প্রিয় সঙ্গী। বলা যায়, মোবাইল ফোন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী। যারা রাতে মাথার কাছে ফোন রেখে ঘুমাতে যান তাদের আয়ু তো চোখে পড়ার মত কমছে। চীন এবং আমেরিকার দুটি পৃথক গবেষণায় গবেষকরা জানিয়েছেন ঘুমানোর সময় শরীরের কাছাকাছি মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ রাখা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ন। আসুন ঝুঁকিগুলো জেনে নিই।
১। গবেষকরা বলছেন, বর্তমানে বেশিরভাগ মোবাইল ফোনেই ব্যবহৃত হয় লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। এই ব্যাটারি থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রায় একশোটি গ্যাস নির্গত হয়, যেগুলো মানবশরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই সমস্ত গ্যাসের মধ্যে রয়েছে কার্বন মনোক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাসও। এই কার্বন মনোক্সাইড যদি অতিমাত্রায় শরীরে প্রবেশ করে তাহলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
সম্প্রতি টেক্সাসে, এক কিশোরি রাতে হঠাৎ পোড়া গন্ধে ঘুম থেকে জেগে ওঠে। কারণ? তার বালিশের নিচে থাকা স্যমসং গ্যালাক্সি এস ৪ গলে গেছে। মূল কারণ আর কিছুই নয় ব্যাটারীর। তবে বিষয়টি সম্পর্কে মোবাইল গ্রাহকদের সচেতনতা অবশ্যই প্রয়োজন।
২। এই সেল ফোন, ল্যাপটপের মত ইলেকট্রনিক ডিভাইস গুলো থেকে বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় তরঙ্গ নির্গত হয় যা এক্স রে, মাইক্রোওয়েভ থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয় তরঙ্গের কাছাকাছি এবং উচ্চ মাত্রার যা টিউমার বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
৩। মোবাইল ফোন মাথার পাশে চার্জে রেখে ঘুমালে ব্যটারী থেকে নির্গত গ্যাসের প্রভাবে চোখ, নাক ও গলা জ্বলার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
স্বাস্থ্য সচেতনতা সম্পর্কে অন্যান্য লেখা –
৪। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি বিপজ্জনক কারণ তাদের সন্তান বিকলাঙ্গ হয়ে জন্ম নিতে পারে শুধু এই মোবাইল ফোন থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয় রশ্মির কারণে। আর এই তেজস্ক্রিয় রশ্মি কতটা ক্ষতিকর তার জলন্ত উদাহরণ পেতে চাইলে সেই জাপানের হিরোশিমা আর নাগাসাকিতে ফেলা পারমাণবিক বোমের কথা স্মরণ করতে পারেন। যার তেজস্ক্রিয়তা এখনও বিদ্যমার। সেখানে এখনো বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হয়।
৫। আবার অনেকে রাতে রুম অন্ধকার করে বিছানায় শুয়ে ফেইসবুক দেখেন বা প্রয়োজনীয় মেইল দেখেন। মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ থেকে একধরণের ব্লু-রে নির্গত হয় যা চোখের ক্ষতি করে থাকে, দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে দেয়। মোবাইল বা ল্যাপটপের সমান আলো যেন আমার চারপাশে থাকে সেদিকে নজন দিন।
৬। মানসিকভাবেও এটি ক্ষতি করে, যেমন মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া। ঘুম না হওয়া। মাথা ব্যথা করা সহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়া।
সবশেষে বলব, এই মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপের মত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসগুলোর অনিয়মিত ব্যবহারের ফলাফল সাথে সাথে উপলব্ধি করা যায় না বা প্রকাশ পায় না। এটি নিরব ঘাতক। আর বড় কোনো শারীরিক সমস্যা ঘটার আগ পর্যন্ত এর প্রভাব আপনার পরিলক্ষিত হবে না।
০১/০৫/২০২২, ০৯.০০ AM