ইফতারের পর হার্ট অ্যাটাক ও আমাদের করনীয়
ইফতারের পর হার্ট অ্যাটাক বাড়ছে আর সে কারনে আমাদের সকলের সতর্ক হতে হবে। ইফতারের পর হাসপাতালে হার্ট অ্যাটাক নিয়ে ভর্তি হওয়ার হার অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। অনেকে হার্ট অ্যাটাকের ব্যাথা কে ভুল করে এসিডিটির পেইন মনে করে এন্টাসিড বা ইনো খেয়ে আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরবর্তিতে তারা তীব্র বুকের ব্যাথা নিয়ে রমজান মাসে সন্ধ্যা বেলা ইফতারির পর চিকিৎসকের চেম্বারে বা হসপিটালের ইমারজেন্সী বিভাগে আসেন। ইসিজি করার পর প্রতীয়মান হয় যে উনার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এবং ততক্ষণে জটিলতা বেড়ে যায়।
যেকোনো ভারী খাবার দাবারের পর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রচুর খাবার একসাথে গেলে সেগুলোকে সামাল দেয়ার জন্য পাকস্থলীকে তার কাজ অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে হয়। বেশি কাজ মানেই বেশি শক্তি। এই অতিরিক্ত শক্তির জন্য তার রক্তও দরকার হয় বেশি। কিন্তু এই অতিরিক্ত রক্ত সে কোথায় পাবে? পাকস্থলীর মোটামোটি কাছের প্রতিবেশী যেহেতু হার্ট, তখন হার্টকে ত্যাগ স্বীকার করতে হয় বেশ খানিকটা রক্ত। আর ঠিক তখনই ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা।

রোজায় সারাদিন না খেয়ে আমরা স্বাভাবিকভাবেই বেশ ক্ষুধার্ত থাকি। আমাদের মস্তিষ্ক বারবার সিগনাল পাঠাতে থাকে – খাবার দাও, খাবার দাও। টেবিলে সাজানো গোছানো সুস্বাদু সব খাবার আর ব্রেইনের সিগনালের ফাঁদে আমরা খুব সহজেই ধরা পড়ে যাই। গোগ্রাসে প্রচুর খাবার গিলতে থাকি। তারপর আমাদের অজান্তেই শরীরের মধ্যে চলতে থাকে আন্তঃপ্রতিবেশী রক্ত আদান-প্রদান। কখনো কখনো হজম প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করতে শরীরের বিভিন্ন অর্গান বা অংগ থেকে পাকস্থলী বা স্টমাকের দিকে রক্তের ডাইভারসন হয়। এর মাঝে হৃদপিন্ড বা হার্ট অন্যতম যেখানে রক্ত চলাচলে স্বল্পতা ঘটে। ফলশ্রুতিতে ভারী খাবার দাবারের ২ ঘন্টার মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায় প্রায় চারগুণ।
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য সম্পর্কে অন্যান্য লেখা –
তাই, ইফতারে পরমিত খাবার খান। দরকার হলে অল্প অল্প করে ২/৩ বারে খান। ইফতারের খাবার দুই ধাপে গ্রহনের আরো ভাল উপায় হচ্ছে, মাগরিবের আজানের পর পর পানি আর খেজুর দিয়ে খাবার গ্রহন শুরু করলেও পরবর্তিতে ফল খান। এর পর মাগরিবের নামাজ আদায় করে কিছুক্ষন বিরতি দিয়ে পূনরায় খাবার টেবিলে ফিরে আসুন এবং ইফতারির ভারী খাবারগুলো যেমন, পেয়াজু, বেগুনী, আলুর চপ, ডিম চপ সহ ছোলা বুট দিয়ে মুড়িমাখা খেয়ে ইফতারের সমাপ্তি টানতে পারেন। চা পানের অভ্যেশ থাকলে তা ইফতারির ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পরে পান করা ভালো। যেহেতু এখন গরম একটু বেশি, আপনি কিছুক্ষন পর পর পানি পান করুন। সেই সাথে নিজের স্বজনদের খাবারের দিকেও খেয়াল রাখুন। নিজে সুস্থ থাকুন, অন্যকেও সুস্থ রাখুন। রমজান মুবারাক।
২৮/০৪/২০২২, ১০.০০ AM